পুলিশ পদোন্নতির লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও পরীক্ষায় আসতে পারে সংজ্ঞা নিচে দেওয়া হলঃ
১. সরকারি কর্মচারী
সরকারী কর্মচারী বলতে যিনি কোন সরকারী চাকুরীতে নিযুক্ত বা বেতনভোগী বা কোন সরকারী কর্তব্য সম্পাদন বাবদ পারিশ্রমিক গ্রহনকারী ব্যক্তিকে বুঝায়।
সরকারী কর্মচারী কে ইংরেজিতে Public Servant বলা হয়।
দন্ডবিধি ২১ ধারা।
২. প্রতারণামূলকভাবে
কোন ব্যক্তির ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে প্রতারনার মাধ্যমে কোন কাজ সংঘটিত করা হলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত কাজ প্রতারনামূলকভাবে করেছে বলে গন্য হবে।
প্রতারণামূলকভাবে কে ইংরেজিতে Fraudulently বলা হয়।
দন্ডবিধি ২৫ ধারা।
৩. মূল্যবান জামানত
মূল্যবান জামানত একটি দলিল বুঝায়, যা কোন আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠিত, সম্প্রসারিত, হস্তান্তরিত, সীমিত, বিলুপ্ত বা খারিজ করা হয় অথবা যা দ্বারা কোন ব্যক্তি এই মর্মে স্বীকার করেন যে, তিনি কোন আইনানুগ দায়িত্বাধীনে রয়েছে বা তার কোন বিশেষ আইনানুগ অধিকার নাই।
মূল্যবান জামানত কে ইংরেজিতে Valuable security বলা হয়।
উদাহরণ : ‘ক’ একটি হুন্ডির পৃষ্ঠে তার নাম সই করেন। যেহেতু এই পৃষ্ঠাঙ্কনের ফল হচ্ছে হুন্ডির স্বত্ব এরূপ কোন ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করা, যিনি তার আইনানুগ ধারক হতে পারেন। সেহেতু উক্ত পৃষ্ঠাঙ্কন একটি “মূল্যবান জামানত” বলে গণ্য হবে।
দন্ডবিধি ৩০ ধারা।
একটু খেয়াল করুন, এই পোস্টের সকল এমসিকিউ Law School BD অ্যাপ থেকে নেওয়া হয়েছে।
Law School BD অ্যাপে পুলিশ পদোন্নতি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়—
১. সকল আইনের ভাষ্য
২. আইনের সূচি
৩. সংজ্ঞা ও পার্থক্য
৪. বাস্তব সমস্যা
৫. এমসিকিউ (MCQ)
৬. রচনামূলক প্রশ্ন
রয়েছে, যা আপনি পাবেন একটি বইয়ের মূল্যে।
এই অ্যাপটিতে প্রায় ৭-৮টি আইন বইয়ের সমপরিমান কন্টেন রয়েছে যা আপনি পাবেন একটি বইয়ের মূল্যে।
পুলিশ বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ন ৩০০+ সংঙ্গা Law School BD অ্যাপে রয়েছে।
Law School BD অ্যাপ এখান থেকে ডাউনলোড করুন।
৪. অপরাধ
আইনে যে সকল কাজ করলে অথবা না করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে তাকে সাধারণত অপরাধ বলে।
অপরাধ কে ইংরেজিতে Offence বলা হয়।
নোট: যে ব্যক্তি অপরাধ করে তাকে অপরাধী বলে। এই অপরাধীকে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় শাস্তির আওতায় আনা আবশ্যক।
দন্ডবিধি ৪০ ধারা, ফৌজদারী কার্যবিধি ৪(১)(ণ) ধারা।
৫. সদবিশ্বাস/সরল বিশ্বাস
দন্ডবিধি আইনের ৫২ ধারানুযায়ী যথাযথ সর্তকতা ও মনোযোগ সহকারে যে কাজ করা হয় সে কাজ সদবিশ্বাসে করা হয়েছে বলে গণ্য হবে। আইনের পরিভাষায়, সততার সাথে যে কাজই করা হয় তা অবহেলা করে হোক বা সতর্কতার সাথে হোক উক্ত কাজ সদবিশ্বাসেই করা হয়েছে বলে গণ্য হয়।
সদবিশ্বাস কে ইংরেজিতে Good Faith বলা হয়।
দন্ডবিধি ৫২ ধারা।
৬. আশ্রয়দান
দন্ডবিধি আইনের ১৩০ ও ১৫৭ ধারায় যেক্ষেত্রে আশ্রিত ব্যক্তিকে তার স্ত্রী বা স্বামী কর্তৃক আশ্রয় দেওয়া হয় সে ক্ষেত্র ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তিকে আশ্রয়, খাদ্য, পানীয়, অর্থ, কাপড়, অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করা বা গ্রেফতার এড়াবার জন্য সহযোগিতা করাকে আশ্যয়দান বলা হয়।
আশ্রয়দান কে ইরেজিতে Harbour বলা হয়।
দন্ডবিধি ৫২-ক ধারা।
৭. আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার
আত্মরক্ষা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। বিশ্বের কোন রাষ্ট্রেই তার সকল নাগরিককে পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করতে পারেনা। তাই বিশ্বের সকল আইনেই আত্মরক্ষার অধিকারকে মৌল মানবিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার (The Right of Private Defence): আত্মরক্ষার অধিকার কথাটি ব্যাপক এবং বিস্তৃত তবে সাধারণ ভাষায় আমরা বলতে পারি, নিজের জানমাল অপরের জান মাল এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে মারাত্মক আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিহত করার জন্য আইনে যে অধিকার দেয়া হয়েছে তাকে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার বলে। অন্যভাবে বলা যায়, দন্ডবিধি ৯৯ ধারার আরোপিত নিয়ন্ত্রন সাপেক্ষে নিজের জানমাল অপরের জানমাল বা সরকারী সম্পত্তি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য আক্রমনকারীর বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাকে আত্নরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার বলা হয়।
আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার কে ইংরেজিতে The Right of Private Defence বলা হয়।
নোটঃ আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করলে কোন কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। এই অধিকার দন্ডবিধি আইনের ৯৬ থেকে ১০৬ ধারা মোতাবেক প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
দন্ডবিধি ৯৬, ৯৭ ধারা, পিআরবি ১৫৩(খ) বিধি।
৮. আইনানুগ অভিভাবকত্ব হতে মনুষ্য হরণ
যে ব্যক্তি চৌদ্দ বছরের কম বয়স্ক পুরুষ বা ষোল বছরের কম বয়স্ক কোন নাবালক নারী বা কোন অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তিকে তার আইনানুগ অভিভাবকের তত্ত্বাবধান হতে অভিভাবকের সম্মতি ব্যতিত অসৎ উদ্দেশ্যে দেশে বা বিদেশে নিয়ে যায় বা প্রলুব্ধ করে নিয়ে যায়, সে ব্যক্তি নাবালক বা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তিকে আইনানুগ অভিভাবকত্ব হতে অপহরণ করেছে বলে গণ্য হবে।
শাস্তিঃ দন্ডবিধি ৩৬৩ ধারা।
দন্ডবিধি ৩৬১ ধারা।
৯. অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎকরণ
যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির অস্থাবর সম্পত্তি আত্নসাৎ করে তার নিজের ব্যবহারে পরিণত করে তাকে অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্নসাৎ বলে। তাছাড়া কোন সম্পত্তি পরিত্যক্ত অবস্থায় বা পড়ে থাকা অবস্থায় কুড়িয়ে পাওয়ার পর তার প্রকৃত মালিককে খোজে বের না করে তা নিজ ব্যবহারে পরিণত করাকে অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্নসাৎ করণ বলে।
অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎকরণ কে ইংরেজিতে Dishonestly misappropriation of property বলা হয়।
উদাহরণ: “ক” রাজপথের উপরে একটি টাকা পায়, সে জানে না টাকাটি কার, “ক” টাকাটি তুলে নেয়, এক্ষেত্রে “ক” এই অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্নসাৎকরণ করেছে।
দন্ডবিধি ৪০৩, ৪০৪ ধারা।
১০. অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ
কোন সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তি অসাধুভাবে নিজে ভোগ করে বা নিজে ব্যবহার করে বা ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যকোন ব্যক্তিকে সেরুপ করার অনুমতি দান করে তাকে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ বলে।
অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ কে ইংরেজিতে Criminal Breach of Trust বলা হয়।
অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ একটি আমলযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধীকে পুলিশ অফিসার বিনাপরোয়ানায় গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করতে পারবেন।
শাস্তিঃ দন্ডবিধি ৪০৬ থেকে ৪০৯ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।
দন্ডবিধি ৪০৫ ধারা।
১১. অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ
যদি কোন ব্যক্তি অপরাধ সংঘটন করার উদ্দেশ্যে অপর কোন ব্যক্তির দখলভুক্ত সম্পত্তিতে প্রবেশ করে বেআইনীভাবে অবস্থান করে, সম্পত্তি দখলকারী ব্যক্তিকে ভীতি প্রদর্শন, অপমান করার বা বিরক্ত করার উদ্ধেশে অনুরুপ প্রবেশ করে তাকে অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ বলে।
অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ কে ইংরেজিতে Criminal Trespass বলা হয়।
শাস্তিঃ দন্ডবিধি ৪৪৭ ধারা, যার মেয়াদ হচ্ছে তিন মাস পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা পাঁচশত টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড।
দন্ডবিধি ৪৪১ ধারা।
১২. জামিনযোগ্য অপরাধ
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪-১(খ) ধারা মোতাবেক জামিনযোগ্য অপরাধ বলতে সে সকল অপরাধকে বুঝায় যা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের দ্বিতীয় তফসিলে বা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোন আইনে জামিনযোগ্য দেখানো হয়েছে। আইনের পরিভাষায় যে অপরাধগুলো করলে অপরাধীর জন্য দেশের প্রচলিত আইনে জামিনের ব্যবস্থা আছে সে অপরাধগুলোকে জামিনযোগ্য অপরাধ বলে।
জামিনযোগ্য অপরাধ কে ইংরেজিতে Bailable Offence বলা হয়।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪-১(খ) ধারা।
১৩. জামিনের অযোগ্য অপরাধ
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪-১ (খ) ধারা মোতাবেক জামিনের অযোগ্য অপরাধ বলতে সে সকল অপরাধকে বুঝায় যা অত্র আইনের দ্বিতীয় তফসিলে বা বর্তমানে বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা জামিনের অযোগ্য দেখানো হয়েছে। আইনের পরিভাষায় সে অপরাধগুলো করলে অপরাধীর জন্য দেশের প্রচলিত আইনে জামিনের ব্যবস্থা নাই সে অপরাধ গুলোকে জামিনের অযোগ্য অপরাধ বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪-১(খ) ধারা।
১৪. তদন্ত
সঠিক তথ্য উদ্ঘাটন তথা সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হতে ক্ষমতা প্রাপ্ত কোন পুলিশ অফিসার বা অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত সকল কার্যক্রমকে তদন্ত বলে। তদন্তের মাধ্যমে অপরাধের সঠিক তথ্য উদঘাটনসহ অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা যায়।
তদন্ত কে ইংরেজিতে Investigation বলা হয়।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪-১(ঠ), ১৫৬ ধারা, পিআরবি ২৫৮ বিধি।
১৫. চার্জশীট
পুলিশ অফিসার মামলা তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদালতে বিচারের জন্য এবং অভিযুক্ত নয় এমন আসামীদের অব্যাহতি প্রদানের লক্ষ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট যে প্রতিবেদন দাখিল করেন তাকে চার্জশীট বলা হয়।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১৭৩ ধারা, পিআরবি ২৭২ বিধি।
১৬. জেনারেল ডায়েরী
থানা বা ফাঁড়িতে পুলিশের যাবতীয় কার্যক্রম তথা থানায় বা ফাঁড়িতে দৈনন্দিন যে কোনো ধরনের সংবাদ আসলে তা নির্ধারিত বিপি ফরম নং ৬৫, বাংলাদেশ ফরম নং ৫৩৬৫ মোতাবেক ২০০ পৃষ্ঠা সমৃদ্ধ যে রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে জেনারেল ডায়েরি বলে। তাছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেল ডায়েরিকে পুলিশের রক্ষাকবচ বলা হয়ে থাকে।
পুলিশের দৈনন্দিন কার্যক্রম যেমন, ডিউটি, ছুটি, বদলি,আসামি গ্রেফতার, আসামিকে হাজতে রাখার সময়, তারিখসহ অন্যান্য সকল বিষয়াদি সংক্ষেপে জেনারেল ডায়রিতে লিপিবদ্ধ করা হয়।
সাক্ষ্য আইনের ৯,৩৫,৭৪ ধারা মোতাবেক জেনারেল ডায়রি আদালতে প্রাসঙ্গিক।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১৫৪,১৫৫ ধারা, পিআরবি ৩৭৭ বিধি, পুলিশ আইন ৪৪ ধারা।
১৭. স্বীকারোক্তি
কোন ফৌজদারী মামলার আসামী কোন ক্ষমতাবান ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট প্রলোভন, ভীতি প্রদর্শন বা প্রতিশ্রুতি ছাড়া স্বেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করে যে জবানবন্দি করে তাকে স্বীকারোক্তি বলা হয়।
পুলিশের নিকট প্রদত্ত স্বীকারোক্তি আদালতে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে উক্ত স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ আলামত উদ্ধার করতে পারলে উক্ত স্বীকারোক্তি আদালতে প্রাসঙ্গিক।
স্বীকারোক্তি কে ইংরেজিতে Confession বলা হয়।
সাক্ষ্য আইন ২৪-৩০ ধারা, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪, ৩৬৪ ধারা, পিআরবি ৪৬৭ ধারা।
১৮. মৃত্যুকালীন জবানবন্দী
মৃত্যুর সম্মুখীন কোন ব্যক্তি তার মৃত্যুর কারণ বা যে ঘটনার ফলে তার মৃত্যু ঘটেছে বা আদালতের বিচার্য কোন ঘটনা তার অবগতি সম্পর্কে তিনি যে বিবৃতি প্রদান করে তাকে মৃত্যুকালীন জবানবন্দী বলা হয়।
মৃত্যুকালীন জবানবন্দী কে ইংরেজিতে Dying Declarations বলা হয়।
মৃতুকালীন জবানবন্দী ডাক্তার, পুলিশ অফিসার, ম্যাজিস্ট্রেট, এমনকি একজন পুলিশ কনস্টেবলও লিপিবদ্ধ করতে পারেন।
সাক্ষ্য আইন ৩২(১) ধারা, পিআরবি ২৬৬ বিধি।
১৯. এলার্ম প্যারেড বা হুঁশিয়ারী কুচকাওয়াজ
জেলা পুলিশ সুপার কর্তৃক ট্রেজারী গার্ড পরিদর্শনকালে ট্রেজারী গার্ডে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের সচেতনতা যাচাই করার জন্য যে প্যারেড বা কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় তাকে এলার্ম প্যারেড বা হুঁশিয়ারী কুচকাওয়াজ বলা হয়।
পিআরবি ৬৯৫(২২) বিধি।
২০. মানবাধিকার
১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য যে অধিকার সমূহ উল্লেখ রয়েছে তাকে মানবাধিকার বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্মগত সার্বজনীন স্বীকৃত অধিকার সমূহকে মানবাধিকার বলা হয়।
মানবাধিকার কে ইংরেজিতে Human Rights বলা হয়।
মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রের ১ থেকে ৩০ অনুচ্ছেদ।
২১. ডমিসিলারী ভিজিট
পুলিশ সুপার এর নিকট দাগী অপরাধীর সম্পর্কে রিপোর্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে অপরাধীর সাথে পরিচিত হয়ে দিনের বেলা অপরাধীর বাড়ি বা বাসগৃহ পরিদর্শন করাকে ডমিসিলারী ভিজিট বলে।
পিআরবি ৫৮১, ৫৮২ বিধি।
২২. তদন্ত পুনরুজ্জীবন (Revival)
মামলার ফাইনাল রিপোর্ট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর যদি উক্ত মামলার ঘটনার বিষয়ে কোন তথ্য, উপাত্ত, আলামত বা অন্য কোন রহস্য উন্মোচিত হয় তাহলে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার জন্য আদালতের আদেশ মোতাবেক পুনরায় মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করাকে তদন্ত পুনরুজ্জীবন বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১৭৩ (২) ধারা, পিআরবি ২৭৭ বিধি।
২৩. মডাস অপারেন্ডি
মডাস অপারেন্ডি শব্দের অর্থ কোন কর্মকৌশল বা অপরাধ প্রক্রিয়া। কোনো অপরাধী অপরাধকালে যে প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে তাকেই উক্ত অপরাধীর মডাস অপারেন্ডি বলা হয়। যেকোনো অপরাধী তার নির্দিষ্ট কর্ম পদ্ধতি বা যে সিস্টেম সহজ মনে হয় সেই পদ্ধতিতে অপরাধ করে থাকে। যেমন, যে ব্যক্তি রোডে ডাকাতি করে সফলতা পায় সেই অপরাধীরা কখনো গৃহ ডাকাতি করে না। সুতরাং বলা যায়, যে পদ্ধতি বা সে সিস্টেম অনুসরণ করে অপরাধীরা অপরাধ সম্পন্ন করে তাকে মডাস অপারেন্ডি বলা হয়। মডাস অপারেন্ডির মধ্যে অপরাধীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মানসিক প্রতিচ্ছবি, ব্যক্তিত্বের অদ্ভূত আচরণসহ আরো অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সাক্ষ্য আইন ৯,২৭,৪৫ ধারা।
২৪. শ্যোন এ্যারেস্ট (Shown Arrest)
শ্যোন অ্যারেস্ট অর্থ গ্রেফতার দেখানো। মামলা তদন্তকারী পুলিশ অফিসার যদি জানতে পারেন যে, তার মামলার এজাহারনামীয় আসামী বা সন্দেহভাজন আসামী অন্য কোন মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে আটক আছেন, সেক্ষেত্রে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার এই মামলার তথ্য উল্লেখ পূর্বক গ্রেফতারকৃত উক্ত আসামীকে তার মামলায় পুনরায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালত বরাবর আবেদন করবেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত উক্ত আসামীকে বর্ণিত মামলায় আবার গ্রেফতার দেখাবেন এরূপ গ্রেফতার পদ্ধতিকে পুনঃগ্রেফতার বা শ্যোন অ্যারেস্ট( Shown Arrest) বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৫১ ধারা।
২৫. রাজসাক্ষী
দায়রা আদালতে বিচারযোগ্য কোন অপরাধী বা ১০ বছরের কারাদন্ডে দন্ডনীয় কোন অপরাধ বা দন্ডবিধি ২১৬(ক), ৩৬৯, ৪০১, ৪৩৫ ধারার কোন অপরাধের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৩৩৭,৩৩৮ ধারা মোতাবেক একাধিক অপরাধীর মধ্য থেকে কোন অপরাধী নিজেকে জড়িয়ে সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে সাক্ষ্য প্রদান করলে তাকে অপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে এই শর্তে যে সাক্ষী নির্ধারণ করা হয়। তাকে রাজসাক্ষী বলে। রাজসাক্ষী যদি সঠিক তথ্য প্রদান না করে সেক্ষেত্রে তার বিচার করা যায়। তবে এককভাবে ভিন্ন আদালতে তার বিচার করতে হবে।
রাজসাক্ষী কে ইংরেজিতে Approver বলা হয়।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৭৭ ধারা, পিআরবি ৪৫৯ বিধি।
২৬. খানা তল্লাশি
তল্লাশি শব্দের অর্থ অনুসন্ধান করা বা খোঁজাখুঁজি করা। কার্যবিধি ৯৪ ধারা মোতাবেক মামলার আলামত, ৯৫ ধারা মোতাবেক অবৈধ ডাক-পার্সেল, ৯৮ ধারা মোতাবেক চোৱাইমান, জাল দলিল, ৯৯(ক) ধারা মোতাবেক অশ্লীল বই বা ম্যাগাজিন এবং ১০০ ধারা মোতাবেক অবৈধভাবে আটক ব্যক্তিকে উদ্ধার করার জন্য পরোয়ানাসহ বা পরোয়ানা ছাড়া যে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় তাকে তল্লাশি বলে। তল্লাশি যদি কোন গৃহে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে উক্ত তল্লাশিকে গৃহ তল্লাশি বা খানা তল্লাশি (House Search) বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১০২,১০৩,১৬৫,১৬৬ ধারা, পিআরবি ২৮০ বিধি।
২৭. কমিউনিটি পুলিশিং
থানা এলাকার অপরাধ দমন সহ আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য স্থানীয় জনসাধারণকে পুলিশি কাজে সম্পৃক্ত করে গৃহিত কার্যক্রমকে কমিউনিটি পুলিশিং বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৪২,৪৩,৪৪ ও ৪৫ ধারা, পুলিশ আইন ১৭ ধারা, পিআরবি ৬৭৪/৬৭৫/৬৭৬ বিধি।
২৮. বৈরী সাক্ষী
যে পক্ষ সাক্ষীকে হাজির করে সেই পক্ষের বিরুদ্ধে সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদান করাকে বৈরী সাক্ষী বলা হয়।
বৈরী সাক্ষী কে শত্রুসাক্ষীও বলে থাকে। বৈরী সাক্ষী বা শত্রুসাক্ষী কে ইংরেজিতে Hostile Witness বলা হয়।
সাক্ষ্য আইন ১৫৪ ধারা।
২৯. ডিসচার্জ সার্টিফিকেট
চাকুরী হতে বিদায় গ্রহণকালীন সময় প্রত্যেক পুলিশ কর্মচারীকে পুলিশ সুপারের স্বাক্ষরযুক্ত যে সার্টিফিকেট দেয়া হয় তাকে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট বলে।
পিআরবি ৯০৩ বিধি।
৩০. আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক জবানবন্দি
আসামী আদালতে হাজির হয়ে নিজেকে অপরাধের দায় হতে রক্ষা করার জন্য নিজেই নিজের পক্ষে যে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন, তাকে আত্নপক্ষ সমর্থনমূলক জবানবন্দি বলে। আত্নপক্ষ সমর্থনমূলক জবানবন্দি প্রদান করা আসামীর আইনগত অধিকার।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৪০ ধারা, সাক্ষ্য আইন ১১ ধারা।
৩১. শোন অ্যারেষ্ট বা পুনঃ গ্রেফতার
কোন মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার মামলার তদন্তকালে জানতে পারেন যে, তার নিকট তদন্তাধীন মামলার কোন আসামী অন্যকোন মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে আটক আছেন, তাহলে তদন্তকারী কর্মকর্তা উক্ত আসামী যে বর্ণিত মামলায় জড়িত আছে সে বিষয়টি উল্লেখ পূর্বক গ্রেফতারকৃত ঐ আসামীকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করবেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আসামীকে এই মামলায় আবার গ্রেফতার দেখাবেন, এরুপ গ্রেফতারকে শোন অ্যারেষ্ট বা পুনঃ গ্রেফতার বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৫১ ধারা।
৩২. বিচার্য বিষয়
কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিচারকের নিকট সুবিচার পাওয়ার লিখিত বা মৌখিক ভাবে অভিযোগ দায়ের করার পর উক্ত অভিযুক্তের বিরোদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদালত যে চার্জ গঠন করেন সেই চার্জকে বিচার্য বিষয় বলে।
উদাহরণ: করিম রহিমকে লাঠি দ্বারা আঘাত করেছে, এই বিষয়ে বিচার চলছে। এখানে করিম রহিমকে আঘাত করেছে , সেটা হচ্ছে বিচার্য বিষয়।
সাক্ষ্য আইন ৩ ধারা।
৩৩. প্রাসঙ্গিক বিষয়
সাক্ষ্য আাইনের ৩ ধারা মোতাবেক আদালত বিচার্য বিষয়ের সাথে যে বিষয় গুলো সংশ্লিষ্ট সেই বিষয় গুলো প্রাসঙ্গিক বিষয়।
উদাহরণ: করিম রহিমকে লাঠি দ্বারা আঘাত করেছে, এই বিষয়ে বিচার চলছে। এখানে করিম রহিমকে আঘাত করেছে , সেটা হচ্ছে বিচার্য বিষয় এবং যা দ্বারা আঘাত করেছে সেটা হচ্ছে প্রাসঙ্গিক বিষয়।
সাক্ষ্য আইন ৩ ধারা।
৩৪. বোবা সাক্ষী
যে ব্যক্তি কথা বলতে পারে না সে ব্যক্তি ইশারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে বা লেখার মাধ্যমে আদালতে যে সাক্ষ্য প্রদান করেন সেই সাক্ষীকে বোবা সাক্ষী বলে। তবে সেই লেখা বা ইশারা প্রকাশ্য আদালতে করতে হবে। বোবা সাক্ষী ইশারা মাধ্যমে অথবা লিখিতভাবে সাক্ষ্য দিলেও সেটা মৌখিক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হবে।
সাক্ষ্য আইন ১১৯ ধারা।
৩৫. দালিলিক সাক্ষ্য
সাক্ষ্য আইনের ৬১, ৬২, ৬৩ ধারা মোতাবেক কোন বিচার্য বা বিচারাধীন বিষয়কে প্রমাণ বা অপ্রমাণ করার জন্য আদালতে যে বস্তুগত সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয় তাকে দালিলিক সাক্ষ্য বলে। দালিলিক সাক্ষ্য দুই প্রকার যথাঃ ১.প্রাথমিক, ২. মাধ্যমিক। আইনের পরিভাষায় হাজারো মৌখিক সাক্ষ্য অপেক্ষা একটি দালিলিক সাক্ষ্যের গুরুত্ব অধিক।
সাক্ষ্য আইন ৬১,৬২,৬৩ ধারা।
৩৬. প্রাথমিক সাক্ষ্য
সাক্ষ্য আইনের ৬২ ধারা মোতাবেক কোন বিচার্য বা বিচারাধীন বিষয়কে প্রমাণ বা অপ্রমাণ করার জন্য আদালতে যদি মূল দলিল উপস্থাপন করা হয় তাকে প্রাথমিক সাক্ষ্য (Primary Evidence) বলে। কতিপয় ক্ষেত্র ব্যতীত সকল ক্ষেত্রে প্রাথমিক সাক্ষ্য দ্বারা দলিল প্রমাণ করতে হয়।
সাক্ষ্য আইন ৬২ ধারা।
৩৭. থানা ক্যাশবহি
পিআরবি ৪০৯ বিধি মোতাবেক থানায় ক্যাশ বহি (রেজিস্টার) সংরক্ষণ হয়। অফিসার ইনচার্জের লিখিত আদেশে সিনিয়র সাব-ইন্সপেক্টর এই বহির দায়িত্বে থাকেন। পুলিশ অফিস হতে বা আদালত হতে প্রাপ্ত অর্থ বা বিভাগীয় জরিমানা হতে আদায়কৃত অর্থ বা অন্য কোন সোর্স হতে প্রাপ্ত অর্থ বহিতে লিপিবদ্ধ করে থানার মালখানার সিন্ধুকে ভালাবদ্ধ করে রাখতে হয়। বহির সকল এন্ট্রিতেই থানার ওসি এবং বহি রক্ষণাবেক্ষণকারী অফিসারর স্বাক্ষর করতে হয়। উক্ত রেজিস্টারে কার্বণ ব্যবহার করে দুই কপিতে লিখে কপি পুলিশ অফিসে পাঠাতে হয়। গৃহীত অর্থের প্রতিটি এন্ট্রির বিপরীতে একটি প্রাপ্তি রশিদ লিখতে হয়। প্রতিদিনের খরচ পৃথক পৃথক ভাউচারে তারিখ অনুযায়ী মাসিক ভাউচার প্রস্তুত করে ক্রমিক নম্বর বসাতে হয়।
পিআরবি ৪০৯ বিধি।
৩৮. ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন
যে প্রশ্নের মধ্যে প্রশ্নের উত্তর লুকায়িত থাকে বা উত্তরের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, সেই প্রশ্নকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বলে। জেরা করার সময় সাক্ষীকে ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যায়।
ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন কে ইংরেজিতে Leading Questions বলা হয়।
সাক্ষ্য আইন ১৪১ ধারা।
৩৯. অভ্যাসগত অপরাধী
অভ্যাসগত অপরাধীরা সাধারণত ভবঘুরে প্রকৃতির হয় থাকে। তাদের প্রকাশ্য কোন আয়ের উৎস থাকে না। অভ্যাসগত অপরাধীরা কখনোই পেশাদার অপরাধী হয় না এবং তারা পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই ছোটো খাটো অপরাধ করে থাকে। তাদের নির্দিষ্ট কোন অপরাধ প্রক্রিয়া থাকে না। অভ্যাসগত অপরাধীকে গ্রেফতার করে তাদের নিকট হতে আদালত সদাচরণের মুচলেকা গ্রহণ করে থাকে।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১০৯,১১০ ধারা, পিআরবি ৪০১ বিধি।
৪০. অসৎ চরিত্রের লোকদের তালিকা-এ
নিজ থানা এলাকায় বসবাসকারী পুরাতন চোর-ডাকাত, অভ্যাসগত অপরাধী বা পুলিশের তালিকাভুক্ত অপরাধী যখন বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্য থানা এলাকায় গিয়ে বসবাস করেন তখন থানার অফিসার ইনচার্জ উক্ত অপরাধীর বর্তমান অবস্থা জানার জন্য তার নাম-ঠিকানা, স্বভাব-চরিত্রের বিবরণ উল্লেখ পূর্বক সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর যে পত্র প্রেরণ করেন তাকে অসৎ চরিত্রের লোকদের তালিকা-এ (এ-রোল) বলে।
এ ধরনের অপরাধীকে ফৌজদারী কার্যবিধি ৫৫ ধারায় গ্রেফতার করে ১১০ ধারা মোতাবেক আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করা যায়।
পিআরবি ৩৪৩ বিধি।
আপনার পুলিশ পদোন্নতির লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করতে Law School BD অ্যাপে ৩০০+ সংঙ্গা পড়তে ও শিখতে পারেন।